Wednesday, January 5, 2011

দুঃখটাকে ভাগাভাগি করি

প্রথম আলোয় প্রকাশিত মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘দুঃখটাকে ভাগাভাগি করি’ লেখাটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে অত্যন্ত জরুরি পরামর্শ উঠে এসেছে।
আমার মনে পড়ে, ২০০৩-০৪ সেশনে আমরা যখন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগে ভর্তি হয়েছিল, তখন ছিলাম ১২০ জন। কিছুদিনের মধ্যেই ১০ জন ভর্তি বাতিল করে অন্যত্র চলে যায়। তারপর আমরা ১১০ জন চার বছর একসঙ্গে পড়াশোনা করি। আমার এক বন্ধু বুয়েটে ভর্তি হয়েছিল। সেখানে এক মাস পড়ার পর সে ভর্তি বাতিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসে। পরে শুনেছি, বুয়েটে তার আসনটি নাকি চার বছর ফাঁকাই ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর প্রায় এক মাস পর্যন্ত মাইগ্রেশনের সময় দেওয়া হয় (যদিও সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া হয় না)। কিন্তু এরপর যদি কেউ ভর্তি বাতিল করে অন্য কোথাও চলে যায়, তাহলে আর সেই ফাঁকা আসনগুলো পূরণ করা হয় না। এভাবে প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেক আসন ফাঁকা থাকে। তা ছাড়া আবার দেখা যায়, একই সঙ্গে পড়াশোনা শুরু করে চার বছর পর কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চাকরি করে; আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ে ছয় বছরেও অনার্স কোর্স শেষ করতে পারে না। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আসনও ফাঁকা থাকবে না এবং সেশনজটও অনেক কমে যাবে।গত বছর একমাত্র শাবিপ্রবিতে এসএমএসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এ বছর অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএমএসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সেটা যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কষ্ট কতটা কমিয়ে দিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বড় কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে এসএমএসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে ভর্তি পরীক্ষা নিতে দেখা যায়নি। শিগগিরই নেবে বলেও মনে হচ্ছে না। রুয়েট, কুয়েট, চুয়েট আগে যখন বিআইটি ছিল, তখন সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিত। এখন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর তারাও আর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয় না। শিক্ষার্থীদের দুঃখ-কষ্টের কথা অনেকেই বুঝতে চায় না।বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বায়ত্তশাসিত হওয়ার পরও দেখা যায়, সরকার বদল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনেরও বদল হয়। দলীয় লোক বসানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যের আসনে। তাই সরকার থেকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার নির্দেশ দিলে নিশ্চয়ই উপাচার্য মহোদয় অমত করবেন না। সরকার কি লাখ লাখ শিক্ষার্থীর কষ্টের কথা, অভিভাবকদের কষ্টের কথা চিন্তা করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এতটুকু কাজ করতে পারে না?
মো. আমিনুর রহমান
কম্পিউটার প্রকৌশলী।
amin_cse71@yahoo.com

No comments:

Post a Comment